অফবিট

সাঁইবাড়ির নৃশংস হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত সিপিআইএমকে নাকী গনতন্ত্রের রক্ষক বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়! কাকে ভোট দেবে যাদবপুরবাসী?

আগামী ১ জুন অন্তিম পর্বের ভোটগ্রহন হবে দেশ জুড়ে। সপ্তম দফায় দেশের আটটি রাজ্যের ৫৭টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহন হবে যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নয়টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হবে। সপ্তম দফায় রাজ্যের নয়টি আসনের মধ্যে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের দিকে রাজনৈতিক মহলের নজর থাকবে। যাদবপুর কেন্দ্রে এবার বিজেপি, তৃনমূল কংগ্রেস, সিপিআইএমের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে। যাদবপুরে বিজেপি দক্ষ কর্মকর্তা ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে, তৃনমূল কংগ্রেস সায়নী ঘোষকে এবং বামেরা সৃজন ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করেছে। শেষ পর্যন্ত যাদবপুর কার হবে তা ঠিক হবে আগামী ১ জুন, তবে তার আগে নির্বাচনী প্রচারে কোনও কমতি রাখছেনা কোনও পক্ষই। রাজ্য জুড়ে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ইতিমধ্যেই শাসকদল অস্বস্তিতে রয়েছে, তার উপর সায়নী ঘোষের মতে বিতর্কিত প্রার্থীকে যাদবপুরের দায়িত্ব দেওয়ায় এমনওতেই যাদবপুরে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে রয়েছে তৃনমূল কংগ্রেস। সমীক্ষা বলছে যাদবপুরে ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চালকের আসনে রয়েছে বিজেপি।

যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র একটা সময় বামেদের দুর্গ ছিল। শুধু যাদবপুর নয় গোটা রাজ্যেই সুদীর্ঘ ৩৪ বছর সিপিআইএম ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু আজ রাজ্য রাজনীতিতে বামেদের কোনও অস্তিত্ব নেই। একটা সময় রাজ্য প্রবল প্রতাপশালী বামেরা আজ অতীতের ছায়ামাত্র। আাগমী দিনে বামেরা লুপ্ত হতে হতে ইতিহাসের পাতায় চলে যাবে। দীর্ঘ ৩৪ বছরে একের পর এক অত্যাচার, দুর্নীতির কারনে মানুষ গনতন্ত্রের মন্দির থেকে বামেদের বের করে দিয়েছে। কিন্তু তবুও নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধারের জন্য বামেরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যদিও তারা নিজেরাও জানে তারা আর কখনও ক্ষমতায় আসতে পারবেনা বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের। রাজ্যের যেকয়টি অঞ্চলে বামেদের ভোটব্যাংক একটু রয়েছে সেইরকম একটি জায়গা হল দক্ষিন চব্বিশ পরগনার যাদবপুর।

যাদবপুরে ক্ষমতায় আসতে সৃজন ভট্টাচার্যের মতো নতুন মুখকে দাঁড় করিয়েছে সিপিআইএম। বামেরা যত চেষ্টাই করুক যাদবপুরের মানুষ অতীত ভোলেনি। বর্ধমানের সাঁইবাড়ির নৃশংস হত্যাকান্ডের দগদগে স্মৃতি আজও ভোলেনি মানুষ। ১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ নবকুমার সাঁই, প্রনব সাঁই, মলয় সাঁই সহ তাদের বাড়ির গৃহশিক্ষক জিতেন রায়কে নৃশংস ভাবে হত্যা করে লাল সন্ত্রাসীরা। এমনকী সাঁই ভাইদের বৃদ্ধা মাকে জোর করে ছেলেদের রক্তমাখা ভাত খাওয়ানোর মতো অমানবিক কাজ করে তারা।

বামেরা কী মনে করে যাদবপুর বাসী সেই কথা ভুলে গিয়ে আবার তাদের ভোট দেবে? নাকী এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বিনয় কোঙার, নিরুপম সেন, অমল হালদার, অনিল বোসের মতোন বামফ্রন্ট নেতাদের কথা মানুষের মনে নেই?

অন্যদিকে যাদবপুরে উচ্চশিক্ষিত, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বিজেপির প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় গত আড়াই মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে যাদবপুরে নির্বাচনী প্রচারে। দীর্ঘদিন বিজেপির কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করা ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। গত আড়াই মাসে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী অনির্বাণ বাবু যাদবপুরের মানুষের কাছে তাদের ঘরের ছেলেই হয়ে গিয়েছে। আগামী ১ জুন যাদবপুরবাসী কাকে বেছে নেবে অতীতে সেই অত্যাচারী বামফ্রন্টের প্রার্থীকে নাকী গনতন্ত্রের রক্ষক, ভদ্রলোক বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *