অফবিট

বাম আমলে প্রায় ১০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ!

চলতি লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের একাধিক দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে প্রচার করছে বামেরা। একসময় দীর্ঘ ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গে শাসনক্ষমতায় থাকা বামেরা আজ রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো শূন্য। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বামেরা প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিন্তু তবুও তরুন প্রজন্মকে সামনে এনে বামেরা তাদের হারানো জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছিলো কিন্তু এরই মাঝে এবার বাম আমলে রাজ্যে ব্যাপক আর্থিক দূর্নীতির একটি বড় খবর সামনে এল। বাম আমলে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ইসিএসসি বা অত্যাবশকীয় পন্য সরবরাহ দপ্তরে অন্তত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ভোটের ময়দানে স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাতে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে বামেরা।

রাজ্য বিধানসভায় পেশ করা ২০১৬-১৭ সালের তথ্য থেকেই বাম আমলের এই দুর্নীতির কথা জানা যায়। শুধু আর্থিক ক্ষতিই হয়নি বরং কলকাতা সহ বিদেশের কোর্টেও একাধিক মামলা চলছে এই আর্থিক প্রতারনাকে কেন্দ্র করে। রাজ্য বিধানসভায় পেশ হওয়া ২০১৬-১৭ এর বার্ষিক তথ্য থেকে জানা যায় ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশী আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে দেশ, বিদেশে পন্য রপ্তানির ক্ষেত্রে। এই সময়কালে ইসিএসসির পন্য রপ্তানির জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে অগ্রিম অর্থ দেয়, সেইসব সংস্থা বা সংস্থায় যুক্ত থাকা ব্যাক্তির মাধ্যমে ইসিএসসির ওই অর্থের ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ফৌজদারি মামলাও চলছে। এই আর্থিক দুর্নীতি কান্ডে মূল অভিযুক্ত তৎকালীন ইসিএসসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আইএএস আর এস জামির এবং দেবাদিত্য চক্রবর্তী।

চীনে লৌহ আকরিক পাঠানোকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার করা হয়েছিল এই দুই অফিসারকে। এছাড়াও পোষাক, জিঙ্ক, তামা, আলু, পাম তেল, তুলো, কপার ক্যাথোড সহ বিভিন্ন ধরনের সব্জি রপ্তানির ক্ষেত্রেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে সেসময়। চীনে আকরিক লোহা পাঠানোর জন্য জাহাজকে ভাড়া দেওয়ার জন্য একটি সংস্থাকে অগ্রিম অর্থ দেওয়া হয়েছিল ইসিএসসির তরফে। কিন্ত পড়ে জানা যায় ওই নির্দিষ্ট সংস্থা জাহাজকে তো ভাড়া দেয়নি উপরন্তু পন্য অন্য কাউকে বিক্রি করে দেওয়া হয় দুর্নীতি করে। এই আকরিক লোহা রপ্তানিকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের ৫৮.২৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। উপরন্তু ইসিএসসি তার দেওয়া অগ্রিম অর্থ পর্যন্ত ফেরত পায়নি।

আকরিক লোহা দুর্নীতির জন্য কলকাতা হাইকোর্টে ও হংকং এর আন্তর্জাতিক আদালতে সত্তর কোটি টাকা দাবী করে মামলা চলছে। সরকার কোনও সংস্থাকে অর্থ দেবার আগে নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার ডেকে তারপর অর্থ প্রদান করে। কিন্তু বাম আমলে কোনওরূপ টেন্ডার ছাড়াই ইসিএসসি পন্য রপ্তানির বেশ কিছু সংস্থা অগ্রিম মোটা অর্থ দেয়, যাদের মধ্যে বহু সংস্থারই পরবর্তী কালে কোনও খোঁজই পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছিল প্রাক্তন ইসিএসসির পরিচালক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃনমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের পর বাম আমলের এই আর্থিক দুর্নীতির খবর সামনে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *