অফবিট

যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে কেন বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ই এগিয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে?

রাজ্যে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে যেকয়টি কেন্দ্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন তাদের মধ্যে একটি যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র। দীর্ঘ দিন এই যাদবপুর বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, মালিনী ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তীদের মতোন বাম নেতাদের আমলে যাদবপুর রীতিমতো লাল দুর্গ ছিল। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে যাদবপুরে বামেরা শক্তিহীন। ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুরে পরপর তিনবার তৃনমূল কংগ্রেস জয়লাভ করেছে। কিন্তু চলতি আঠারোতম লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুরে শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেস কিছুটা ব্যাকফুটে রয়েছে। যাদবপুরে শাসকদলের ব্যাকফুটে থাকার প্রধান কারন সাম্প্রতিক সময়ে শাসকদলের একাধিক দূর্নীতি খবর সামনে আসা, সায়নী ঘোষের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রার্থী করা, ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতোন দক্ষ ও বিচক্ষন ব্যক্তিকে এবারে যাদবপুরে রাজ্য বিজেপির প্রার্থী করা। তবে শাসকদলের পিছিয়ে থাকার আরও একটি কারন আছে তাহল পূর্ববর্তী তৃনমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর নির্বাচনের পর নিজ কেন্দ্রে তেমন ভাবে উপস্থিত না হওয়া৷

২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা ও সিপিআইএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে হারিয়ে ৬,৮৮,৪৭২ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে, যা যাদবপুরে মোট ভোটের ৪৭.৯১ শতাংশ ছিল। কিন্তু তারপরে গত পাঁচ বছরে সংসদে যাদবপুরের সাংসদ হিসাবে উপস্থিতি ছিল মাত্র ২১ শতাংশ এবং সংসদে মাত্র সাতটি বিতর্কে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মিমি চক্রবর্তী এগারোটি সিনেমা করেছেন, টেলি জগৎএ তার নিয়মিত উপস্থিত থাকলেও সংসদে বিগত পাঁচ বছরে তিনি বিদ্যাধরপুরে লেভেল ক্রসিং, চম্পাহাটি ও সোনারপুর স্টেশনে ফ্লাইওভার এবং গড়িয়া স্টেশনে আলাদা প্ল্যাটফর্ম ছাড়া যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য আর কিছু চাননি তিনি।

ভারতে প্রতিবছর পাঁচ কোটি টাকা গড়ে একজন সাংসদ তাঁর পাঁচ বছরের সময়কালে মোট ২৫ কোটি টাকা পায় নিজের লোকসভা কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য। বিদায়ী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী জানিয়েছিল তিনি ১৭ কোটি খরচ করেছেন এলাকার উন্নয়নে। কিন্তু স্পষ্টতই তার কম উপস্থিতির কারনে দলের পাশপাশি যাদবপুরবাসীও খুশি নন। যাদবপুর বাসী এমন একজন প্রার্থীকে চাইছে যে সর্বসময় তাদের পাশে থাকবে। ঠিক এখানেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। গত আড়াই মাস ধরে পুরো যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত নির্বাচনী প্রচার করছেন ও মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছেন ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। যাদবপুরের ইতিহাসে কোনও প্রার্থী এভাবে যাদবপুরবাসীর পাশে থাকেননি। তাছাড়া এবারেও তৃনমূল কংগ্রেস যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে যাকে প্রার্থী করেছে সেই সায়নী ঘোষও মিমি চক্রবর্তীর মতোনই একজন অভিনেত্রী। যার জন্য যাদবপুরবাসী এবারে আর অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না, তারা বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন এবারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। প্রার্থী হিসাবে অনির্বাণ বাবু তৃনমূল প্রার্থী ও সিপিআইএম প্রার্থীদের থেকে শিক্ষায়, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় অনেকটাই এগিয়ে। তাছাড়া দীর্ঘদিন বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির হয়ে যুক্ত থাকা ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে কোনও দূর্নীতি ও বিতর্কের অভিযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *