অফবিট

নিজেদের দুর্নীতির কারনেই আজ পশ্চিমবঙ্গে বামেরা শূন্য

কমিউনিজম বা সাম্যবাদ একটি সামাজিক ব্যাধি যা কোনও দেশকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়। সামজের শোষিত, অবহেলিত মানুষদের তথাকথিত বিত্তবানদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কার্ল মার্ক্স কমিউনিজমের প্রচার করে ইউরোপে। কয়েক দশকের মধ্যেই দাবানলের মতো পুরো ইউরোপে কমিউনিজম ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য কার্ল মার্ক্সকে কমিউনিজমের জনক বলা হয়। কিন্তু বিংশ শতাব্দী আসতে আসতে কমিউনিজম তার মূল লক্ষ্য থেকে সরে যায়।

কমিউনিস্ট শাসকদের দ্বিচারিতা এবং নৃশংসতা প্রকাশ পায়। কমিউনিস্ট শাসনে নিপীড়িত মানুষদের নীপিড়ন পূর্বের তুলনায় বহুগুন বৃদ্ধি পায়। বিংশ শতাব্দীতে কমিউনিজম অনেকটা ব্যবসার মতো হয়ে যায় যার সূত্রপাত ঘটে সোভিয়েত রাশিয়ায়। সোভিয়েত রাশিয়ার সাধারন মানুষ একটা সময় জারের অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদ্রোহ করে জারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং একটি অস্থায়ী গনতান্ত্রিক সরকার গঠন করে। কিন্তু এই পরিস্থিতির সুযোগ নেয় ভ্লাদিমির লেনিন, লেনিন তার বলশেভিক দলকে নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে রীতিমতো সহিংস আন্দোলন শুরু করে ক্ষমতা দখলের জন্য। সোভিয়েত রাশিয়াতে এই ঘটনাকে লাল সন্ত্রাস বা রেড টেরর বলা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিটি দেশে বিত্তবান শ্রেনীর উপর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেনীর মানুষদের ক্ষোভ ও হিংসা থাকে। লেনিন এটারই সুযোগ নেয়, নির্বাচনে পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও ক্ষমতার লোভে লেনিন রাশিয়ার বিত্তবান শ্রেনীর মানুষদের হত্যা শুরু করে। লেনিনের কুখ্যাত বলশেভিক সদস্যরা ও গোপন পুলিশ বাহিনী চেকা ১৯১৮ সাল থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত চার বছরে লাল সন্ত্রাসের মাধ্যমে অন্তত দুই লাখ মানুষকে হত্যা করে যাদের বেশীরভাগই ধনী সম্প্রদায় ছিল।

রাশিয়াতে দীর্ঘকাল শাসনের জন্য লেনিন রাশিয়ার জার নিকোলাস দ্বিতীয়কে পরিবার সমেত নৃশংস ভাবে হত্যা করে যাতে জারের কোনও উত্তরাধিকার না থাকে। লেনিনের এই নৃশংস, হিংস্র বামপন্থী দমননীতি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যা জন্ম দেয় জোসেফ স্টালিন থেকে শুরু করে চীনের মাও জেডং, কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো, চে গুয়েভারা, উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের মতো অত্যাচারী স্বৈরাচারী শাসকের। এসব শাসকের শাসনকালে দেশগুলোতে অসংখ্য সাধারন মানুষের মৃত্যু হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবে কমিউনিজমের কালো ছায়া ভারতেও পড়ে ১৯২০ এর দশকে। তবে ইশ্বরের আশীর্বাদে বামপন্থীরা কখনও ভারতের রাজনীতির মূল কেন্দ্রে যেতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও কেরলেই শুধুমাত্র তারা আবদ্ধ ছিল। একসময় ভারতের অর্থনীতির প্রধানকেন্দ্র ছিল পশ্চিমবঙ্গ, একটা সময় বলা হত বাংলা আজ যা ভাবে গোটা ভারত আগামীদিন তাই ভাববে কিন্তু ৩৪ বছরের বাম শাসনে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের বাকী রাজ্যগুলোর থেকে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। বাম আমলে সীমাহীন দুর্নীতির কারনে আজ পশ্চিমবঙ্গের উপর ঋনের বোঝা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কল্যানে বামেদের আসল স্বরূপ আজ দেশবাসী জেনে গেছে যার জন্য কেরালা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরাতে আজ বামেরা শূন্য। যদি আজ বাম দলগুলো ভারতের শাসন ক্ষমতায় আসতো তাহলে সোভিয়েত ইউনিয়ন, কিউবা, লাওসের মতো ভারতও দুর্নীতির আখড়াতে পরিনত হত এবং ঋনের বোঝায় জর্জরিত হত বলে মত একাধিক বিশেষজ্ঞদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *