অফবিট

বাম শাসনে রাজ্যে শিক্ষক দূর্নীতি

বামপন্থা বা কমিউনিজম যেকোনও দেশের জন্য অভিশাপ স্বরূপ। বামপন্থা এমন এক মতাদর্শ যা কোনও দেশের জন্য হুমকী স্বরূপ। মধ্যযুগে যখন আধুনিক সভ্যতা ছিলনা সেসময়ের আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে বামপন্থা আদর্শ ছিল কিন্তু বর্তমানে মুক্ত বানিজ্য নীতি ও পুঁজিবাদি সমাজে বামপন্থা ভিত্তিহীন। যার জন্য বামপন্থীদের সংখ্যা কমতে কমতে গুটি কয়েক দেশের মধ্যে টিকে আছে। ভারতেরও একসময়ের প্রতাপী কমিউনিস্ট দল সিপিআইএম আজ তার অতীতের ছায়ামাত্র। লাগামছাড়া দূর্নীতি, অত্যাচারের কারনে সিপিআইএম আজ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শূন্য, শুধুমাত্র কেরলাতেই তারা টিকে আছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে সিপিআইএমের শাসনকালে ভুরি ভুরি দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেসের শিক্ষক দূর্নীতির মতোন বামেরাও রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতির সাথে যুক্ত। 

শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষকের চাকরি যায়। ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলই বাতিল করে দেওয়া হয়। তবে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। নিয়োগ দূর্নীতিতে উচ্চ আদালতে মুখ পোড়ার পর সুপ্রিম কোর্টেও এই মামলায় অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি কর্তৃপক্ষ কার্যত দূর্নীতির কথা স্বীকার করে নেয়। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত হাইকোর্টের নির্দেশে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দিয়ে আগামী ১৬ জুলাই পরবর্তী শুননির দিন ধার্য করেছে। শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেসের এই শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতির বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে সরব সব বিরোধী পক্ষই। বিশেষ করে শাসকদলকে কোনঠাসা করে রাজ্যে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে সিপিআইএম। কিন্তু ইতিহাস বলছে নিয়োগ কান্ডে সিপিআইএমও স্বচ্ছ নয়। রাজ্য সরকারের পাশপাশি বামেদের বিরুদ্ধেও শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতির আভিযোগ রয়েছে অতীতে। শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেসও বামেদের শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতির কথা প্রকাশ্যে এনেছে। সিপিআইএম সরকারের আমলে রাজ্যে অবৈধভাবে ২,২০০ জন শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ সালে তৎকালীন অবিভক্ত মেদিনীপুরে ২,২০০ জন প্রাথমিক শিক্ষককে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করে সিপিআইএম সরকার। সেসময় সিপিআইএম সরকারের এই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা করে ৮১ জন যোগ্য চাকরি প্রার্থী। যোগ্যদের বঞ্চিত করে সিপিআইএম সদস্যদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই মামলার তদন্তের পর ২০১২ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ৮১ জন চাকরি প্রার্থীর দাবীকে সঠিক মান্যতা দিয়ে ২,২০০ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। অতীতে সিপিআইএম তাদের বিরুদ্ধে হওয়া এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করলেও হাইকোর্টে নির্দেশের পর প্রমান হয়ে যায় বাম আমলের দূর্নীতির কথা। বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বামেদের দূর্নীতির কথা পুনরায় উঠে আসায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিআইএম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *