দেবী সরস্বতীর হাতে কেন বই থাকে জানেন?
বিদ্যার দেবী সরস্বতী। কিন্তু কে এই দেবী সরস্বতী?
সরস্বতী জ্ঞানের দেবী, বিদ্যার দেবী। অনেকে আবার বলে থাকে যে, দেবী সরস্বতী ব্রহ্মার স্ত্রী। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মার স্ত্রী বলে কেউ নেই। পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বরের সৃষ্টিকারী রূপের নাম ব্রহ্মা।আর ব্রহ্মার নারী শক্তির নাম সরস্বতী।
দেবী সরস্বতীর গায়ের রং সাদা কেন?
তার কারণ, দেবী সরস্বতীর শুভ্রমুর্তি নিষ্কলুষ চরিত্রের প্রতীক। যা এই শিক্ষা দেয় যে, প্রত্যেক ছেলেমেয়েকে হতে হবে নিষ্কলুষ-নির্মল চরিত্রের অধিকারী।
দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস। রাজহাঁসের মধ্যে এমন ক্ষমতা আছে যে, একটি পাত্রে থাকা জল মিশ্রিত দুধের থেকে সে শুধুমাত্র দুধটুকু শুষে নিতে পারে।এই তথ্য শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা দেয় যে, সমাজে ভালোমন্দ সবকিছুই থাকবে, তার মধ্য থেকে শুধু ভালোটুকুই শুষে নিতে হবে।
হিন্দুধর্ম হলো নাচ-গানে সমৃদ্ধ শিল্পকলার ধর্ম, যা সামাজিক বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে ধারণ করে।প্রত্যেক ছেলেমেয়েই কোনো না কোনো প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে, সমৃদ্ধ ও বিজ্ঞানসম্মত হিন্দুধর্ম এই সামাজিক বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দেয়, আর দেবী সরস্বতীর হাতের বীণা হচ্ছে সেই শিল্পকলার প্রতীক।
দেবী সরস্বতীর হাতে পুস্তক থাকে। কারণ- পুস্তক হলো জ্ঞানের ভান্ডার বা জ্ঞানের বাস হলো পুস্তকে। যেহেতু সরস্বতী হলো জ্ঞানের দেবী, তাই দেবী সরস্বতীর হাতে থাকে পুস্তক বা পুজায় পাঠ্যপুস্তক দিতে হয়।
দেবী সরস্বতী পদ্মফুলের আসনে বিরাজ করেন। পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মফুল হলো সফল ও সমৃদ্ধ জীবনের প্রতীক। এককথায় ফুলের বিকাশের সাথে মানুষের জীবনের বিকাশকে তুলনা করা হয়েছে। পূর্ণ বিকশিত একটি পদ্মফুলের উপর দেবী সরস্বতীর বসে থাকার মানে হলো, দেবী সরস্বতীর আদর্শকে লালন করে নিজের জীবনকে বিকশিত করতে পারলে সেই জীবনও হবে ফুলের মতোই পবিত্র, সুন্দর, বিকশিত ও সমৃদ্ধ।