ফিচার আর্টিকেল

রামায়ণ ও মহাভারতের মতোন দুই পুরাণের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়েও তারা উপেক্ষা ছাড়া আর কিছু পাননি

নিউজ ডেস্ক: মহাভারত এবং রামায়ণে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অবহেলিত চরিত্র হল-  অম্বা এবং ঊর্মিলা। 

এখন প্রথমে তাদের সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক। 

ঊর্মিলা হলেন জনক দেশের রাজা জনক এবং সুনয়নার কন্যা ও সীতার ছোটো বোন। উর্মিলা শ্রী রামের ছোটো ভাই লক্ষণকে বিবাহ করেন। 

কিন্তু এখন প্রশ্ন হল উর্মিলার চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? আর তিনি কেনই বা অবহেলিত?? 

যখন শ্রীরাম ও দেবী সীতা বনবাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন দাদা অন্তপ্রাণ লক্ষণও তাদের সাথে যোগ দেন। ঊর্মিলা তার স্বামী লক্ষণের সাথে বনবাসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু লক্ষণ তাঁর স্ত্রীকে বলেন তুমি আমাদের সাথে বনবাসে না গিয়ে বাড়িতে পিতা মাতা এবং বাকি সকলের খেয়াল রাখো। 

সেইকারণে ঊর্মিলাকে রেখে যান অযোধ্যার রাজভবনে। স্বামী বনে বাস করছেন বলে দেবী ঊর্মিলা ব্রহ্মচারিণী হয়ে ১৪ বছর খড়ের শয্যায় শুতেন আর ফলাহার করতেন। ঊর্মিলার তপস্যার ফলে লক্ষ্মণ পরবর্তীকালে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিতকে বধ করতে সক্ষম হন।

বির্চিত্রবীর্য যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হলে ভীষ্ম তার বৈমাত্রেয় ভ্রাতার জন্য স্বয়ম্বরসভা হতে কাশীরাজের তিন কন্যাকে হরণ করে আনেন। বিবাহের পূর্বে জ্যেষ্ঠা কন্যা অম্বা ভীষ্মকে বলেন যে তিনি পূর্বেই শাল্বরাজকে মনে মনে পতিত্বে বরণ করেছেন সুতরাং তাকে শাল্বের কাছেই যেতে দেওয়া হোক। ভীষ্ম তার অনুরোধ শুনে তাকে শাল্বরাজের কাছে পাঠিয়ে দেন।

কিন্তু অম্বাকে স্বয়ংবরে জেতা হয়েছিল বলে শাল্ব তাকে বরণ করলেন না। তখন অম্বা ভীষ্মের বাল্যগুরু পরশুরাম এর শরণ নিলেন। গুরু আদেশ দিলেও ভীষ্ম কিছুতেই অম্বাকে বিয়ে করতে সম্মত হলেন না। গুরুর কথা অমান্য করায় তাদের দুজনার মধ্যে ঘোর যুদ্ধ হল এবং পরশুরাম পরাজিত হলেন( এই নিয়ে মতান্তর রয়েছে)। অম্বা এবার ভীষ্মবধে দৃঢ় সংকল্প হয়ে মহাদেব এর তপস্যা আরম্ভ করলেন। তার তপস্যায় প্রীত হয়ে মহাদেব বর দিলেন “তুমি জন্মান্তরে দ্রুপদ গৃহে ক্লীবরূপে জন্ম নিয়ে ভীষবধের কারণ হবে।” এই বর পেয়ে অম্বা চিতাগ্নিতে প্রাণ ত্যাগ করলেন।

পরজন্মে অম্বা প্রথমে দ্রুপদ কন্যা শিখণ্ডিনী হয়ে জন্মান এবং স্থুণাকর্ণ নামে এক যক্ষের সাথে লিঙ্গ বিনিময় করে পুরুষ হন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভীষ্মবধের জন্য অর্জুন কৃষ্ণের পরামর্শমত শিখণ্ডীকে নিজের রথের সামনে রেখে ভীষ্মের সম্মুখীন হন। ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ছিল নপুংসক দেখলে ধনুক ত্যাগ করবেন। এজন্য শিখন্ডীকে দেখে তিনি অস্ত্র ত্যাগ করেন এবং অর্জুনের শরে শরশয্যায় মৃতকল্প হয়ে পড়ে থাকেন।

সুতরাং এখানে দেখা যায় যে, দুটি  গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়েও ঊর্মিলা এবং অম্বা-এর  কথা সেইরকম ভাবে জানা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *