উজ্জ্বল ত্বক পেতে কাঠ বাদামের জুড়ি মেলা ভার
নিউজ ডেস্কঃ সুপারফুড নামে পরিচিত কাঠবাদামের গুন কিন্তু অপরিসীম ।একে ঠিক বাদাম বলা যায় না ।এটি আসলে এক ধরনের শস্য বীজ। প্রতিদিন কয়েকটি কাঠ বাদাম খেলে শরীরের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যায় অনেকটাই ।প্রত্যেক দিনের ডায়েটে কাঠবাদাম যোগ করলে তা যেমন শরীরকে রাখে সুস্থ তেমনি শরীরে দেয় পর্যাপ্ত এনার্জির যোগান। তবে ,কাঠবাদাম যে কেবল শরীরের জন্য ভাল তাই নয় রূপচর্চাতেও কাঠবাদাম এর জুড়ি মেলা ভার ।
চলুন তাই জেনে নেওয়া যাক ত্বকের যত্নে কাঠ বাদামের উপকারিতাগুলি –
1)তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে
সারা বছর ধরে, তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের নানা ত্বকের সমস্যায় ভুগতে হয় ।ত্বকের ভেতরে থাকা তৈলগ্রন্থি থেকে অত্যন্ত বেশি পরিমাণে তেল ক্ষরিত হয়ে ত্বককে করে তোলে তৈলাক্ত ।ফলে ত্বকে ব্রণ, বিভিন্ন কালো দাগ ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা দেয় ।এইজন্যেই তৈলাক্ত ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত ।
আর এই তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কাঠ বাদাম এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না ।কিছুটা কাঠবাদাম গুঁড়ো করে নিয়ে তা জলে ভিজিয়ে রেখে, পরদিন সকালবেলা তা পেস্ট করে নিয়ে দইয়ের সাথে মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন ফেসপ্যাক ।নিয়মিত এই ফেসপ্যাক টি মুখে লাগিয়ে 15 কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। পর পর কয়েক দিন ব্যবহার করলেই দেখবেন তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমেছে। সেই সাথে ত্বক হয়ে উঠেছে দাগহীন ও উজ্জ্বল।
2)শুষ্ক ত্বকের যত্নে
কাঠবাদাম যে কেবল তৈলাক্ত ত্বকের যত্নেই কাজ দেয় তা কিন্তু নয়। শুষ্ক ত্বকের যত্নেও এটি খুব ভালো ।শুষ্ক ত্বকে চট করে রুক্ষতা দেখা দেয় অত্যন্ত বেশি। এক্ষেত্রে ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার শুরু করুন কাঠবাদামের ।
একটি পাত্রে আগে থেকে গুঁড়ো করে রাখা কিছু কাঠ বাদাম ও দুধ একসাথে মিশিয়ে প্রথমে তৈরি করে নিতে হবে একটি পেস্ট ।এরপরে ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট অপেক্ষা করে জল দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেললেই দেখবেন ত্বকের আদ্রতা ফিরে এসেছে অনেকটা ।সপ্তাহে মাত্র 3-4 দিন ব্যবহার করুন এটি । দেখবেন ত্বক পরিবর্তিত হয়ে গেছে পুরোপুরিভাবে ।তবে শুধু ফেসপ্যাক ব্যবহারের বদলে নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার ফলেও কিন্তু ত্বকের আদ্রতা বৃদ্ধি পায় অনেকটা।
3)ত্বকের কালো দাগ দূরীকরণ
ত্বকে দাগছোপের সমস্যা দেখা যায় অনেকের ।বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এই সমস্যা বাড়ে আরও বেশ কিছুটা ।তাই ত্বকের যে কোনো রকমের দাগ দূর করতে আজ থেকে ব্যবহার শুরু করুন কাঠবাদামের ।
একটি পাত্রে বাদাম গুঁড়ো, মুলতানি মাটি ও গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে ভালো করে তৈরি করে নিন ফেসপ্যাক ।একদিন পরপর এই ফেসপ্যাক মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন কিছুক্ষণ,যতক্ষণ না মিশ্রণটি পুরোপুরি ভাবে শুকিয়ে আসছে ।এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে ঘষে ঘষে ফেসপ্যাকটি তুলে ফেললে মুখের দাগ কমে যাবে বেশ কিছুটা ।দীর্ঘদিন ব্যবহারে ত্বকে আসবে আমূল পরিবর্তন এবং যে কোনো রকমের দাগ ও পুরোপুরিভাবে যাবে মিলিয়ে ।
4)উজ্জ্বল ত্বক পেতে
বাজার চলতি কোনরকম রাসায়নিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করা ছাড়াই উজ্জ্বল ত্বক পেতে হলে সব থেকে ভালো কাজ দেয় কাঠবাদাম ।এটি যে কেবল বাইরে থেকে ত্বককে উজ্জ্বল করার তাই নয় ত্বকের অভ্যন্তরে কাজ করে যেকোনো রকমের ত্বকের সমস্যা দূর করে ।
উজ্জ্বল ত্বক পেতে একটি পাত্রে চন্দনগুঁড়ো, কাঠবাদাম গুঁড়ো এবং দুধ মিশিয়ে ভালো করে তৈরি করে নিন একটি পেস্ট ।এটি মুখের ওপর ভালো করে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন বেশ কিছুক্ষণ ।মিশ্রণটি শুকিয়ে এলে ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন মুখ ।নিয়মিত এই ফেসপ্যাকের ব্যবহারে ত্বকের মধ্যে জমে থাকা মৃতকোষ যেমন দূর হবে সেই সাথে ত্বক ও হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও ফর্সা ।
5)ত্বকের রিঙ্কেল দূর করতে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে নানা ফাইন লাইনস, রিংকেল প্রভৃতি দেখা যায় ।ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক ও অমসৃণ ।আর তাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত বেশি করে ।লাবণ্যে ভরা ত্বক ফেরত পেতে ব্যবহার করুন কাঠবাদাম।কাঠবাদাম এর ভেতর রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসতে সক্ষম। সেইসাথে এটি বলিরেখার মাত্রাও কমিয়ে ফেলে অনেকটাই ।
বলিরেখাহীন ত্বক পেতে একটি পাত্রে অলিভ অয়েল ও গুঁড়ো বাদাম একসাথে মিশিয়ে তৈরি করে নিন একটি পেস্ট। সেই সঙ্গে মিশিয়ে নিন কিছুটা দই । নিয়মিত এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বকে লক্ষ্য করবেন এক আমূল পরিবর্তন ।