বিনোদন

আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর অ্যারাবিয়ান ঘোড়া বহন করে প্রদর্শন করতেন?

নিউজ ডেস্ক –  যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তথা তাঁর লেডি সর্বদাই সংবাদপত্রের সম্মুখীন থাকেন। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক অযৌক্তিক মন্তব্য করার কারণে বহুবার চর্চার খোরাক হয়েছেন তিনি। এমন একজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন যার স্ত্রী তথা ফার্স্ট লেডি সর্বোদাই  চর্চিত থাকতেন। যদিও সেটি অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য।  

যুক্তরাষ্ট্রের দর্শন রাষ্ট্রপ্রধান জন টেইলরের স্ত্রী জুলিয়া টেইলর ছিলেন ফার্স্ট লেডি। তিনি সর্বদা হিসাব অবাস্তব কর্মকাণ্ডের জন্য সংবাদমাধ্যমে শিরোনামের প্রথম স্থানে থাকতেন।  তাহলে একটু সবিস্তারে বলা যাক।  

প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন জন টেইলর তার প্রথম স্ত্রীকে হারান। মূলত এরপরে নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য জুলিয়াকে বিবাহের প্রস্তাব দেন তিনি। মূলত প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে বিবাহ প্রস্তাব পেয়ে কোনো মেয়েই না করবেন না খুব একটা। মূলত সেইভাবেই  জুলিয়াও না করেনি।  তবে সার্বিক দিক থেকে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হলেও ভালো চোখে দেখতেন না দেশবাসী। কারণ ছিল বয়সের ব্যবধান। প্রেসিডেন্টের বয়স যখন ৫৪ বছর তখন জুলিয়া মাত্র ২৪-শের। অর্থাৎ জুলিয়ার মা ছিলেন জনের ৯ বছরের ছোট এমনকি জনের বড় মেয়ে ছিল জুলিয়ার থেকে ৫ বছরের বড়। অর্থাৎ সম্পর্কের সমীকরণের যে এমন খিচুড়ি অবস্থা তৈরি হয়েছিল তার জন্য গোটা দেশবাসী বিষয়টিকে অন্য নজরে দেখতেন। তবে এখানেই শেষ হয়নি জুলিয়ার আজব কীর্তি। 

প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হওয়ার পর তিনি নিজেকে মহারানী থেকে কিছু কম ভাববেন না। যার কারণে হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন সকলকে কুইন জুলিয়া বলে নিজের পরিচয় করাতেন তিনি। পাশাপাশি যেমন একদিকে রাজকীয় পোশাক পরতেন ঠিক সেরকমই মাথায় শিরস্ত্রাণ পড়তেন সর্বদাই। যেটা আগেকার রানীরা করে থাকে। তবে জুলিয়া এমন কিছু বিকট অলংকার পড়তেন যা হাই সোসাইটিতে বড্ড বেমানান। তবে জুলিয়ার এমন ব্যবহার সকলে মেনে নিলেও একটি বিষয়ে নিন্দা রটেছিল  তার। আর সেটি ছিল সৎ ছেলের প্রতি আকর্ষণ মনোভাব পোষণ করার। 

জুলিয়ার পিতা একজন সেনেটর হওয়ার কারণে একবার- প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন তারা। মূলত সেখানেই জনের ছেলের সঙ্গে দেখা হয় তার। এরপরে সাক্ষাৎকারে কিছুটা আকর্ষণ অনুভব করেছিলেন জুলিয়া।  তবে সেই সময়ে প্রেসিডেন্টের পুত্রেরও পরিবার ছিল। কার্যত জুলিয়ার জন্য পরিবার ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় জুলিয়া।  তবে একটি সাধারন পরিবার থেকে প্রেসিডেন্টের ঘরের সদস্য হলেও নিজের অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেননি তিনি। যার কারণে ১৮০০ দশকে গোটা দেশবাসীর জন্য একটি হ্যান্ড ব্যাগের বিজ্ঞাপন দেয় জুলিয়া। মূলত একজন অভিজাত পরিবারের সদস্য হয়ে এমন নিম্নমানের কাজ করায় রীতিমতো গোটা নিউইয়র্কের সামনে নিন্দনীয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পাশাপাশি তার বদ নামের তালিকা আরও একটি জিনিস ছিল যে  জুলিয়া নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণিত করার জন্য প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে দেরি করে উপস্থিত হতেন। পাশাপাশি নিজের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য শহরে আটটি অ্যারাবিয়ান ঘোড়া বহন করে প্রদর্শন করতেন। মূলত এই করেই নিজেকে সবার নজর রাখার চেষ্টা করতেন প্রেসিডেন্টের পত্নী জুলিয়া। কিন্তু এখানেই শেষ নয় তার  আজব কান্ড। 

মূলত সমাজের নিয়ম ভাঙার শখ ছিল জুলিয়ার। সে কারণেই ব্যভিচারী নারী হওয়ার দরুন যখন সংবাদপত্রের শিরোনামে তার একাধিক বদনাম রোটতো ঠিক তখনই নিজের প্রশংসা নিজে করেই ছদ্মনামে সংবাদপত্রে আর্টিকেল লিখতেন তিনি। যেখানে নিজের ইতিবাচক কথাবার্তা তুলে ধরতেন। তবে এই সুখ ছিল তার যতদিন প্রেসিডেন্ট জীবিত ছিলেন। 

পরবর্তীতে ১৮৬২ সালে  গৃহযুদ্ধের পর প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয়। মূলত সেই সময় সন্তান ছাড়া তার হাতে অবশিষ্ট কিছুই ছিল না। কিন্তু অর্থ উপার্জন তাকে করতেই হতো। অনেক ছেলেদের চাকরির সুযোগ করে দিয়ে নিজে কংগ্রেসের দুয়ারে গিয়ে বহুবার আরজি জানানোর পর পেনশনের ব্যবস্থা করেন। তানি হতাশ আমি একজন সরকারি আধিকারিক তথা প্রেসিডেন্ট থাকার কারণে তিনি খুব সহজেই পেনশন পেয়ে যায়। মূলত জুলিয়া কথা ফার্স্টলেডির কারণেই তিনি ও তার পরের সকল প্রেসিডেন্টের স্ত্রীরা পেনশনের সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *