দেবাদিদেব মহাদেবের নাম নীলকণ্ঠ হল কেন?
নিউজ ডেস্কঃ দেবাদিদেব মহাদেবের বিভিন্ন নাম প্রচলিত রয়েছে। যার মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত নাম হল নীলকণ্ঠ। কিন্তু কেন দেবাদিদেব মহাদেবকে নীলকণ্ঠ বলা হয়?
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, একবার মা লক্ষী এবং ভগবান বিষ্ণুর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। যার ফলে মা লক্ষী বৈকুণ্ঠ ত্যাগ করে সমুদ্রে চলে যান এবং জন্মগ্রহণ করেন সমুদ্ররাজ রত্নাকরের পুত্রী রুপে। মা লক্ষীর বৈকুণ্ঠ ত্যাগ করার কারনে সকল ধনসম্পদ ঐশ্বর্য হারায় দেবতারা। এই সমস্যা থেকে উদ্ধার পেতে সকল দেবতারা শরনাপন্ন হন ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিবের কাছে। তখন তাঁরা দেবতারা পরামর্শ দেয় সমুদ্র মন্থনের আয়ােজন করার।
তবে সমুদ্র মন্থন শুধুমাত্র দেবতাদের পক্ষে করা খুব কষ্ট সাধ্য কাজ ছিল। যার কারনে ভগবান শিবের পরামর্শ দেয় যে এই সমুদ্র মন্থনে অসুরদের আহবান করা। অসুরদের আহবান করা হলে অসুরেরা শর্ত রাখে যে সমুদ্র মন্থন থেকে যা প্রাপ্ত হবে তার অর্ধেক অসুরদের দিতে হবে। অসুরেরা এই শর্ত মেনে নিয়ে যথা সময়ে শুরু হয় সমুদ্র মন্থন। বাসুকী নাগ দ্বারা মন্দার পর্বকে বেষ্টিত করে যখন মন্থনের প্রথম দরি টানা হয় তখন মন্দার পর্বতটি নিচের দিকে যেতে শুরু করে। সেই সময় ভগবান বিষ্ণু কুর্ম অবতার অর্থাৎ কচ্ছেপের রুপ ধারন করে নিজের পিঠের উপর পর্বতকে স্থাপন করে। যার ফলে পর্বতটি আর নিচের দিকে যেতে পারে না। সমুদ্র মন্থনের সময় সবার প্রথমে উঠে এসেছিল হলাহল নামে এক বিষ যা সমস্ত ব্ৰহ্মান্ডের বায়ু বিষাক্ত করে দিয়েছিল। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে রক্ষা করতে শিব এই হলাহল বিষ পান করে। সেই সময় মা পার্বতি এসে ভগবান শিবের কন্ঠ টিপে যাতে এই বিষ মহাদেবের দেহ পর্যন্ত না যেতে পারে। যার ফলে বিষগুলাে মহাদেবের গলাতেই আটকে থাকে এবং তাঁর কন্ঠ নীল হয়ে যায়। এই থেকেই মহাদেবের নাম হয় নীল কন্ঠ।