বিতর্কের মুখে ফুটবল, বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তোলপাড় ইউরোপ
নিউজ ডেস্ক – দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। এই রমরমা মুহূর্তে খেলা শুরুর আগেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে। গোটা ইউরোপ জুড়ে ক্রমশ জোরালো হয়ে উঠেছে কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল বয়কটের আন্দোলন। মানবাধিকার এবং পরিবেশগত উদ্বেগ তুলে ধরে এই আন্দোলন জারি রেখেছে আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হচ্ছে। এটি পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ঘুষ নিয়েছে ফিফা।তবে এই কথা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে বিশ্বের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা। তবে শুধুমাত্র পরিবেশের কথা নয় পূর্বে শ্রমিকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছিল সেই ইস্যুও টেনে তুলেছে আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভকারীদের আরো অভিযোগ যে, ‘২০১০ সালে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোষণার পরে স্টেডিয়াম মেরামত কাজে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার অভিবাসী শ্রমিক মারা গিয়েছিল।
যদিও শ্রমিক মৃত্যুর বিষয়ে কাতারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে প্রতিটি পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া এই আন্দোলনের বিষয়ে ফিনল্যান্ডের প্রাক্তন পেশাদার ফুটবলার টিম স্পারভ ‘কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের বিষয়েও কথা বলেছেন। স্পারভ অভিবাসীদের অধিকার আদায়ের পক্ষে কাজ করেছেন। তবে এর জন্য কাতার বিশ্বকাপ বয়কটের পক্ষে নন তিনি। তার মতে, কাতারকে সুযোগ দেওয়া উচিত। বয়কটের থেকে অন্যান্য বিকল্প রয়েছে। আমি দেখতে চাই, আসর চলাকালীন খেলোয়াড়, ফেডারেশন, কোচ এবং দলগুলোর সঙ্গে কাতার কেমন আচরণ করে। তারা সমস্যাগুলোর সমাধান করুক।
অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা দেশের শ্রম আইন সংশোধন করেছে এবং একটি ন্যূনতম মজুরি চালু করেছে। তবে এ বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের নির্যাতনের ঘটনা রয়ে গেছে এবং শ্রম আইন সংস্কার এখনো অসম্পূর্ণ।
অন্যদিকে স্পেন এবং ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি শহরের বাসিন্দারা বিশ্বকাপের খেলা দেখতে অস্বীকার করেছেন। সেখানকার ফুটবলপ্রেমীদের বক্তব্য, ‘আমরা নিজস্ব উপায়ে মানুষকে কাতার বিশ্বকাপ বয়কট করতে উৎসাহিত করছি। আমরা বিশ্বকাপের কোনো খেলা দেখব না এবং বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের সময়ে আমরা নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ খেলার আয়োজন করব।’
আবার, আট বছর আগে ব্রাজিলে বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে জার্মানিকে নেতৃত্ব দেওয়া ফিলিপ লাম বলেছেন,’অফিসিয়াল প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে বা ভক্ত হিসেবে কাতারে যাবো না। যেখানে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে তারা যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কাজ করে তাহলে সেটি বয়কট করা উচিত। এরকম একটি অঞ্চলে বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করার কোনো মানে হয় না। এজন্য কাতার বিশ্বকাপ বয়কট আন্দোলনকে সমর্থন করি’।