ভিয়েতনাম সহ যে দেশ গুলি ভারত থেকে বারাক-৮ এর মতো এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয় করতে চাইছে
রাজেশ রায়:– ভারত ও ইসরায়েলের যৌথভাবে তৈরি বারাক-৮ সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম কেনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভিয়েতনাম। ভারত, ইসরায়েল ছাড়াও মরোক্ক, আজারবাইজান এই মিসাইল ব্যবহার করে। কীছুমাস আগে হওয়া আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার যুদ্ধে আজারবাইজান এই মিসাইল ব্যবহার করেছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী তার কলকাতা ক্লাস, বিশাখাপত্তনম ক্লাস ডেস্ট্রয়ার, নীলগিরি ক্লাস ফ্রিগেট, আইএনএস বিক্রমাদিত্য এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে ভার্টিকেল লঞ্চ সিস্টেম বা ভিএলএসে এই মিসাইল ব্যবহার করে। ভারতের সদ্য তৈরি হওয়া আইএনএস বিক্রান্তেও ৩২ টি ভিএলএস সিস্টেমে এই মিসাইল ব্যবহার করা হবে। দক্ষিন চীন সাগরে উত্তেজনা চীনের জন্য বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের সাথে সিঙ্গাপুর, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম সহ অনেক দেশেরই ঝামেলা আছে। সেজন্য ভিয়েতনাম সম্প্রতি বারাক-৮ মিসাইল কিনতে চাইছে ভারত থেকে চীনের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য। সম্প্রতি চীন একটি মিলিটারি এক্সারসাইজের জন্য ভিয়েতনামের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল যারজন্য নিজের সীমানা সুরক্ষিত রাখবার জন্য ভিয়েতনামের এই সিস্টেম খুবই দরকার।
ভারতের ডিআরডিও এবং ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ বা আইএআই যৌথভাবে এই মিসাইল সিস্টেম তৈরি করেছে। ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড এগুলো তৈরি করে। এটি একটি সুপারসনিক মিসাইল যার গতি ৩ ম্যাক এবং এটি ৬০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে। ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজ যুক্ত এই মিসাইলে বিশেষ ডাটা লিংক ব্যবহার করা হয়েছে এবং এতে ইলেকট্রনিক ককাউন্টারমেজর সিস্টেম রয়েছে অর্থাৎ শত্রু চাইলেও একে জ্যাম করতে পারবেনা। এই মিসাইলে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী সিকার ব্যবহার করা হয়েছে যা অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়াতেও শত্রু টার্গেটকে খুঁজে বের করতে সক্ষম। ব্যালেস্টিক মিসাইল, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল, যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে ১০০ কিলোমিটার অবধি নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা প্রদান করে এই সিস্টেম। বলা হয় বারক-৮ এর শত্রু টার্গেটকে আঘাত করার অ্যাকুইরেসি ১০০ শতাংশ। বারাক -৮ যখন প্রথম তৈরি হয়েছিল তখন এর রেঞ্জ ছিল ৭০ কিলোমিটার পরে তা বেড়ে হয় ৯০ কিলোমিটার এবং এখন এর রেঞ্জ ১০০ কিলোমিটার। বর্তমানে এই সিস্টেমের ১৫০ কিলোমিটার রেঞ্জের উপর কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ১৫০ কিলোমিটার রেঞ্জের নতুন বারাক-৮ সিস্টেম সফলভাবে ইসরায়েলে পরীক্ষাও করা হয়েছে। শুধু ভিয়েতনামই নয় বরং সৌদি আরব, জার্মানি, কম্বোডিয়া, ফিনল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, পোল্যান্ডের মতন দেশও এই মিসাইল সিস্টেম কিনতে আগ্রহী।