ঘৃতকুমারীর পাতাও স্ট্রেচমার্ক দূরীকরতে যেভাবে ব্যবহার করবেন
স্ট্রেচমার্কস প্রায় আমাদের সকলের শরীরেরই বিভিন্ন অংশে কম বেশি দেখা যায় ।বিশেষত কোমর,থাই, হিপ এ বেশি লক্ষ্য করা যায় এই স্ট্রেচ মার্ক।মোটা থেকে হঠাৎ রোগা হয়ে গেলে বা হঠাৎ ই শরীরের ওজন বেড়ে গেলে শরীরে এই ধরনের স্ট্রেচমার্ক বা ফাটা দাগ দেখা যায় এছাড়া গর্ভধারণের পরবর্তী সময়ে তলপেটে তো প্রত্যেকের ই স্ট্রেচমার্ক দেখা যায় ।এর মূল কারণ হলো কোন ভাবে ত্বকের ডার্মাল লেয়ার এর প্রসরণ ঘটা। শরীরের ওপর এর কোনো কুপ্রভাব না পড়লেও দাগ নিয়ে অনেকেই হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন ।অনেক সময় নানা ঔষধ, মলম বা চিকিৎসার দাঁড়াও এই স্ট্রেচ মার্কস এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় না ।আপনিও যদি সমস্যা এই এক ই হয় তবে আপনার জন্য রয়েছে এক সুখবর ।আসুন জেনে নিই ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে এই দাগ দূর করা যায় ।
১. প্রথমেই বাজার থেকে অলিভ, আমন্ড অয়েল জাতীয় আপনার পছন্দের কয়েকটি তেল কিনে আনুন ।একটি পাত্রে প্রত্যেক ধরনের তেল অল্প পরিমাণে মিশিয়ে ভাল করে প্রত্যেকদিন দাগের ওপর 10 থেকে 15 মিনিট মাসাজ করুন ।দেখবেন দাগ হালকা হতে শুরু করেছে ।
২.দামি বাজার চলতি প্রডাক্ট না কিনেও খুব সহজেই বাড়িতে লেবুর রস,অলিভ অয়েল ও চিনি মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন এক স্ক্রাব।প্রত্যেকদিন স্নানের আগে দাগের ওপর 10 মিনিট ধরে ভালো করে ম্যাসাজ করুন ওই স্ক্রাব দিয়ে ।এরপর ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন জায়গাটি।কিছুদিন ব্যবহার করলেই পাবেন ফল।
৩. শরীরের ফাটা দাগ এর সমস্যায় খুব ভালো কাজ দেয় লেবুর রস ।যদি হাতের সামনে বেশি উপাদান না থাকে তবে ফাটা দাগ নির্মূলে ব্যবহার করুন লেবু । প্রত্যেক দিন লেবুর একটি টুকরো নিয়ে ফাটা দাগের ওপর 15 মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন এতে ক্রমশ দাগ হালকা হতে শুরু করবে।
৪.শুধু তেলে নয় ফাটা দাগ নির্মূলে বিভিন্ন ক্রিম ও ভালো কাজ দেয় ।তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ক্রিম ।দিনে তিনবার দাগের ওপর সেই ক্রিম লাগালে আস্তে আস্তে ফল পাবেন ।কারণ এই ভিটামিন সি দাগ নিরাময় করে।
৫.ঘৃতকুমারীর পাতাও কিন্তু স্ট্রেচমার্ক দূরীকরণে খুব ভালো কাজ দেয় ।ঘৃতকুমারীর পাতা কেটে তার ভেতর থেকে জেলি সদৃশ্য অংশটি বের করে দাগের ওপর সরাসরি লাগাতে হবে ।দু ঘণ্টা অপেক্ষা করে জল দিয়ে ঘষে তুলে ফেলুন জেলটি ।নিয়মিত ব্যবহারে পাবেন উপকার।
৬.আপনি যদি সরাসরি কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে না চান দাগের ওপর তবে নিতে পারেন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট ও ।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই সাপ্লিমেন্ট প্রতিদিন গ্রহণ করলে ক্রমশ দাগ কমে আসবে ।
৭.যেকোনো রকম দাগে আলুর রস ও খুব ভালো কাজ দেয় ।আর স্ট্রেচ মার্কস ও তার ব্যতিক্রম নয় ।একটি আলু দু টুকরো করে কেটে নিয়ে তা ফাটা দাগের ওপর কিছুক্ষণ ধরে ম্যাসাজ করুন ।ভালো করে গোটা জায়গা জুড়ে আলুর রস লাগানো হয়ে গেলে 15 মিনিট অপেক্ষা করে তা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । দেখবেন দাগ দূর হয়ে গেছে।
৮. এপ্রিকট ফলের বিচ ও মার্কস দূরীকরণে ব্যবহার করা যেতে পারে ।তবে এর জন্য প্রথমেই এই বিচ গুলো দিয়ে বানিয়ে নিতে হবে একটি পেস্ট ।প্রতিদিন দুবার পনেরো থেকে কুড়ি মিনিটের জন্য এই পেস্ট ভালো করে দাগের ওপর লাগিয়ে অপেক্ষা করতে হবে ।কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহার করলে দাগ কমবেই।
৯.ডিমের সাদা অংশ ও কিন্তু ব্যবহার করা যায় স্ট্রেচমার্কস দূর করতে ।ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশটি কে একটি বাটির মধ্যে ঢেলে নিন এরপর দিনে তিনবার এটি দাগের ওপর 5 থেকে 10 মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। কিছুদিন ধরে ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে দাগ হালকা হয়ে আসবে ।
১০. ফাটা দাগ দূর করার জন্য অলিভ অয়েল এর জুড়ি মেলা ভার ।আর এতে ঝামেলাও বেশ কম। প্রতিদিন রাতের বেলা ঘুমানোর আগে ভালো করে মার্কস এর ওপর অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে নিতে হবে ।এতে ত্বক ও যেমন মসৃণ হবে তেমন দাগের ও আস্তে আস্তে নিরাময় হবে ।
১১.প্রোটিন জাতীয় খাবার এই ধরনের দাগ দূরীকরণে বিশেষ সহায়তা করে ।এজন্য প্রতিদিনের ডায়েটে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন অবশ্যই রাখবেন ।মাছ, ডিমের সাদা অংশ,দই ,বাদাম ,প্রভৃতি শরীরে প্রোটিনের যোগান দেয় ।
১২. গর্ভাবস্থার পরবর্তীকালে স্ট্রেচ মার্কস থেকে মুক্তি পেতে চাইলে গর্ভধারণের চার মাস সময় থেকেই নিয়মিত অলিভ অয়েল ভেসলিন এই ধরনের জিনিস ব্যবহার করতে থাকুন তাহলে আর পেটের স্ট্রেচ মার্কস পরবেনা ।