অফবিট

কুড়ি বছর ধরে চলতে থাকা কোন ছবি আমেরিকার যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিল?

নিউজ ডেস্কঃ একটি বিশেষ অভিযানে নেমেছেন আমেরিকা বিজ্ঞানীরা রাসায়নিক দিয়ে সবুজ ধ্বংসের পাশাপাশি রাসায়নিক দিয়ে গাছ জ্বলানোর অভিযান। প্লাস্টিক পলিস্টাইরিন, হাইড্রোকার্বন বেঞ্জিন র ভেসলিন দিয়ে তৈরি এই জেলির মত রাসায়নিক মিশ্রণ ভিয়েতনাম জুড়ে ফেলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কখনো বা স্প্রে করে কখনো বা সরাসরিভাবে  ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হতো । কখনো কখনো  তাপমাত্রা প্রায় 1000 ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এ পৌঁছায়। আগুন জ্বলতে থাকে 10 মিনিট ধরে।

1973সালে পৃথিবীর চিত্রসাংবাদিকের বিচারে সেরা ফটো নির্বাচিত হয় একটি ছবি। ছবিটি এতটাই প্রভাব ফেলেছিল  সে যে শুধু এই ছবি নিয়ে আলোচনা বসে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ।সেখানে বলতে শোনা যায় আমার মনে হচ্ছে যে সবই সাজানো। আলোচনায় সামনে এসেছিল মার্কিন সেনা প্রধানের সঙ্গে আলাপচারিতার অডিও টেপ। তিনি বলেছিলেন আমার তোলা এই ছবি ভিয়েতনাম যুদ্ধের মতো সত্য। যুদ্ধের ভয়াবহতা রেকর্ড করার জন্য কোন কিছু সাজানোর দরকার নেই।

14মাস হাসপাতালে রেখে সারিয়ে তোলা হয়েছিল কিমকে। সেদিন ছবিটা তোলার পর 9 বছরের কিম ও অন্যান্য শিশুদের নিয়ে নিকোটিনের হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন কিমের বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম কিন্তু হাল ছাড়েননি নিক উট। করতে হয়েছিল মোট সতেরোটি অস্ত্রোপচার তার মধ্যে ছিল পুড়ে যাওয়া ত্বক প্রতিস্থাপন।

বছর পর বছর সাইগণের পতন হওয়ায় 20 বছর ধরে চলতে থাকা কুখ্যাত ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলেছিল ।

ভিয়েতনাম এমন একটি জায়গা যে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বোমা ফেলা হয়েছিল ।মাইলের পর মাইল জঙ্গল ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল ।অধিকাংশ চাষ জমি হয়ে গেছিল আবাদী। প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ত্রিশ লক্ষ অধিক সাধারণ মানুষ। যা দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রশাসন ও মার্কিন সেনারা ও।1973 সালে সারা পৃথিবীর চিত্র সাংবাদিকেরা ফটো নির্বাচিত হয় এবং  সেই ছবি সামনে আসা নিন্দার ঝড় উঠেছিল সারা বিশ্বজুড়ে। দেশের মাটিতে ও মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন মার্কিন নাগরিকরা। সেটা দেখে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন সবাই। 

সময়টা ছিল 1961। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসডেন্ট জন আফ কেনেডি। ভিয়েতনামের মাটি থেকে সবুজ নিঃশেষ করার পরিকল্পনা ছিল। মার্কিন প্রশাসনের যুক্তি মতে এই ধরনের প্রশাসনিক ব্যবহারের যুক্তি আছে।জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে ছিল গেরিলারা। তাই হয়তো সব জঙ্গল শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। মার্কিন কমিউনিস্ট গেরিলাদের জব্দ করতে ভিয়েতনাম জুড়ে শুরু করেন এই কাজ।1961 সালে এই রাসায়নিক ব্যাবহারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরের দশ বছর ভিয়েতনামে হয়েছিল এজেন্ট অরেঞ্জ নামক কুখ্যাত এই রসায়ন।তাতে স্থানীয় সবাই অনেক গুরুতর ভাবে অসহায় হয়ে গিয়েছিল।

নাপাম বোমার সহায়তায় আমেরিকা রাসায়নিক দিয়ে সবুজ শেষ করার পাশাপাশি সবুজ জ্বালানোর কাজে লেগেছিল। উপর থেকে বোমা ফেলতে শুরু করেন তারা । বোমারু বোমা রেহাই দেইনি তাদের। স্থানীয় কাওদাই মন্দির চত্বর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে রওনা দিয়েছিল কিম ফুক ও গ্রামের লোকজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *