ভারত মহাসাগরে নোঙর করা রয়েছে ভাসমান অস্ত্রাগার
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোলকাতা: পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে জলদস্যুদের উৎপাত কোনো নতুন সমস্যা নয়। বহুকাল ধরেই ওই অঞ্চলে জলপথে বাণিজ্যে একপ্রকার দুর্বিষহ করে তুলেছে দস্যুর দল। অবশেষে এই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলার জন্য বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর হতে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় অস্ত্র। সম্প্রতি অমন উপসাগরের নোঙ্গর ফেলেছে এক ভাসমান অস্ত্রাগার। এমএনজি রেজলিউশন নামটা অনেকের কাছে অচেনা হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। উপকূলরক্ষী বাহিনী যাতে জলদস্যুদের আক্রমণ ঠেকাতে সঠিক সময়ে সঠিক অস্ত্রের যোগান পায় তা সুনিশ্চিত করতেই পত্তন এই ভাসমান অস্ত্রাগারের।
২০০৮-২০১০ সালের মধ্যে আফ্রিকার সোমালিয়ার উপকূলে অগনতিবার ঘটেছে জলদস্যুর আক্রমণ। সেই সময় আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলি জোট বেঁধে সমুদ্রপথ নিরাপদ রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছিল ঠিকই কিন্তু, নৌবাহিনীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় মেলেনি কোনো সুরাহা। অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করতেই তাল মিলিয়ে বেসরকরি নিরাপত্তা সংস্থাগুলি তৎপরতাও বৃদ্ধি পেতে আরম্ভ করে। ওই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গিয়ে বর্তায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা গুলোর ওপরেই।
প্রথম দিকে সংস্থাগুলি তাদের অস্ত্র বিভিন্ন দেশের বন্দরে মজুত রাখত। তবে সেক্ষেত্রেও দেখা যায় নতুন সমস্যা। দেশের অভযন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ভয়ে শ্রীলঙ্কার মতো কিছু দেশ এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট,নাইট ভিশন গগলস্ সহ অন্যান্য সরঞ্জাম দেশে মজুদ রাখার ব্যাপারে আপত্তি জানায়।
পরপর নানা বাঁধার সম্মুখীন হয়ে শেষে সমুদ্রের মাঝখানে এক ভাসমান অস্ত্রভাণ্ডার গড়ে তোলার চিন্তা ভাবনা শুরু হয়। তবে, সেই ভাবনা বাস্তবে রূপায়িত করা ছিল না সহজ! বর্তমানে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ছোট ছোট বেশ কিছু জাহাজকে ভাসমান অস্ত্রাগারে পরিণত করে তা ভারত মহাসাগরের উপকূল বরাবর আন্তর্জাতিক জলসীমায় মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। জলদস্যুর আক্রমণের খবর পাওয়া মাত্র নিরাপত্তারক্ষীরা ভাসমান এই জাহাজগুলো থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে এবং কাজ শেষ হলে সেই সমস্ত অস্ত্র আবার ফিরিয়ে দেয় ভাসমান অস্ত্রাগারেই।
ভারত মহাসাগরের যেসব এলাকায় জলদস্যুবৃত্তির মত ঘটনা বেশি ঘটে তার কাছাকাছি প্রায় সব জায়গাতেই বর্তমানে এমএনজি রেজলিউশনের মতো ভাসমান অস্ত্রভাণ্ডার নোঙর করা আছে। এই অস্ত্রভাণ্ডার ওপর নির্ভর করেই নিরাপত্তারক্ষীরা ভবিষ্যতে জলদস্যুদের আক্রমণ অনেকটা সীমিত করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
