পরমানু সাবমেরিন গুলির দাম ১৬০০০কোটি টাকা। কতগুলি আসতে পারে নৌসেনার হাতে?
নিউজ ডেস্কঃ ভারতবর্ষের সামরিক ক্ষেত্রের সবথেকে বড় অসুবিধা হল বাজেট। স্বাধিনতার পর থেকে সামরিক ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য প্রধান বাঁধা হয়ে দারায় ভারতের এই বাজেট। শুধু যে সামরিক ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করতে চায়না তেমন নয়, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য একটা অনিহা রয়েছে আর সেই কারনে ভুগতে হয় ভারতের সেনাবাহিনীকে।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যে সামরিক বাজেটের সব থেকে কম শেয়ার পেয়েছে নৌবাহিনী। মাত্র ১৪শতাংশ। অর্থাৎ বাকি বাহিনীর থেকে অনেকটাই কম। নৌবাহিনী তৃতীয় ক্যরিয়ার প্রোজেক্ট আনঅফিসিয়ালি বাতিল হয়েছে ইতিমধ্যে। সম্প্রতি নৌবাহিনীর এ্যডমিরালের বক্তব্যের পর দেশের সামরিক ক্ষেত্র নিয়ে বেশ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
নৌসেনার প্রধান এ্যডমিরাল করম্বির সিং একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানে জানিয়েছে ১৮মাস ধরে নৌবাহিনীর ৬টি নিউক্লীয়ার পাওয়ার্ড এ্যটাক সাবমেরিন প্রোজেক্ট পি-৭৬ আটকে রয়েছে, এবং তার প্রধান কারন হল এই যে একজন সিনিয়র গভর্মেন্ট অফিসিয়াল এত টাকা খরচ করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ভেবে দেখুন যেখানে চীনের সাবমেরিনের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে,পাকিস্তান ৮টি নতুন এআইপি প্রযুক্তি থাকা সাবমেরিন ক্রয় করছে। আর ভারতবর্ষ নৌবাহিনীর নিউক্লীয়ার এ্যটাক সাবমেরিন তৈরির জন্য টাকা খরচ করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ভারতের তিনবাহিনীর উন্নয়নে সব থেকে বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে এরা এমনটাই মত একাধিক সামরিক বিশেষজ্ঞদের।
যদিও এ্যডমিরালের বক্তব্যের পর ক্যবিনেট কমিটি নড়েচড়ে বসেছে। এসএসএন প্রোজেক্টের প্ল্যনিং হয়েছিল আজ থেকে ২ দশক আগে ভারতের ব্যলিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন এটিভি প্রোজেক্টের ছায়া সঙ্গী হিসাবে। এবার সিসিএস প্রোজেক্টেও অসুবিধা নেই বলে জানানো হয়েছ, আর সেই কারনে ভারত এটি নিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম। আরিহান্ত ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে নৌবাহিনীর ফ্লিটে আর আরিঘাত এবছর নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে। পাশাপাশি এস৪ এবং এস-৪* ২০২৫ এর মধ্যে যুক্ত হতে চলেছে। ১,৩৫,০০০টনের মোট ৩টি এস-৫ ক্লাস ব্যলিস্টিক মিসাইল সাব তৈরি হওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
ভারতের এসএসএন তৈরিতে সরাসরি সাহায্য করছে ফ্রান্স। এই সাবমেরিনকে স্টেল্থ ক্ষমতা সম্পন্ন করার জন্য ভারতকে পাম্প জেট প্রপাল্সান সিস্টেম ডেভেলপ করতে সাহায্য করছে ফ্রান্স। ভারতের ৬টি এসএসএন তৈরির মূল কারন হল ভারতবর্ষের রণতরী গুলিকে বাঁচানো।
আরিহান্ত বা আরিঘাতের মতো সাবমেরিন গুলি ৮৫মেগাওয়াট রিএ্যক্টরে চালিত হয়, তবে এসএসএন গুলি ১৯০মেগাওয়াট রিএ্যক্টরে চালিত হবে। এবং এই সাবমেরিন গুলির একটি বড় ব্যাপার হল এর গতি কারন এগুলি ৫৫কিমি প্রতি ঘন্টার গতীতে ছুটতে সক্ষম। পাশাপাশি এর সাথে রয়েছে হেভি ওয়েট টর্পেডো, লং রেঞ্জ ক্রুজ মিসাইল এবং মাইন। যা ভারতকে চীনা ক্যরিয়ার গুলির জন্য দূর্দান্ত সিস্টেম হিসাবে কাজ করাতে পারে।
সামরিক বিশেষজ্ঞের মতে প্রথমেই ৬ টি নয়, ৩ টি সাবমেরিনের জন্য ছাড়পত্র দেবে ক্যাবিনেট কমিটি। কিছু বছর পর আরও তিনটির ছাড়পত্র পাবে নৌবাহিনী। এই সাবমেরিন গুলি তৈরিতে মোট খরচ পরবে ৯৬,০০০কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি সাবমেরিনের দাম ১৬০০০কোটি টাকা। একটি সাবমেরিন তৈরি মোট দশ বছর সময় লেগে যাবে।