শকুনি পাশা খেলাতে সবসময় কেন জিততেন জানেন?
নিউজ ডেস্ক – মহাভারতে দেখা গিয়েছে প্রত্যেকটি খেলায় যখনই শকুনি পাশা ব্যবহার করেছে তখনই তিনি জিতেছেন। কারণ শকুনির পাশা একমাত্র তার কথা মতোই চালনা হত। কিন্তু কেন! এমনকি শকুনির পাশা কোন সাধারণ জিনিস দিয়ে নয় হাড় দিয়ে তৈরি করা ছিল! স্বাভাবিকভাবেই পাশা খেলাকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। তবে সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আগে মহাভারতের কিছু বিষয় সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।
মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী মামা শকুনির পাশা তৈরি করা হয়েছিল তার পিতা গান্ধার রাজ সুবলের হাড় দিয়ে। কারণ গান্ধারের কন্যা গান্ধারীর সঙ্গে ধৃতরাষ্ট্রের বিবাহের পূর্বে এক ছাগলের সাথে তার বিবাহ হয়েছিল। গান্ধারী ছিলেন মাঙ্গলিক। সেই দোষ কাটানোর জন্য আগে ছাগলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পর তার মৃত্যু হলে ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। কিন্তু এই মাঙ্গলইকের বিষয়ে জানতেন না ধৃতরাষ্ট্রের পরিবার।
পরবর্তীতে এই সর্ম্পকে যখন গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম জানতে পারে তখন ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে বিধবা বিবাহের ঘোর বিরোধিতা করে গান্ধার রাজ সুবল ও গান্ধারের সমগ্র রাজপরিবারকে রাজ কারাগারে বন্দি করে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি তাদের দিনে মাত্র একটি দানা প্রাপ্য ছিল। সেই কারণেই গঙ্গাপুত্র ভীষ্মের এহেন অত্যাচারেই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গান্ধার পরিবার।
যদিও এই অত্যাচারের বদলা একমাত্র শকুনি নিতে পারতো। আর সেটা জানতো গান্ধার বংশ। সেই জন্যই বদলা নেওয়ার জন্য গান্ধার পরিবারের সকলে নিজের খাবারের ভাগ শকুনিকে দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। এরপর যখন দীর্ঘদিনের অত্যাচারে সকলের মৃত্যু হয় তখন একমাত্র বেঁচেছিলেন শকুনি। এরপরই ভীষ্ম শকুনিকে কারাগার থেকে বার করার আগেই নিজের বাবা সুবলের অস্থি নিয়ে পাশা তৈরি করেছিলেন তিনি। যার কারণেই শকুনির কথামতোই পাশা নিজের কাজ করে। এই পাশা খেলার মাধ্যমেই কৌরবদের মধ্যে
ধৃতরাষ্ট্র ও পান্ডবদের আলাদা করেছিল শকুনি। এমনকি জুয়া খেলাতে পঞ্চপান্ডবকে হারিয়ে দ্রৌপদীকে নিলামেও তুলেছিল শকুনি। তাই খেলার ময়দান হোক কিংবা কুরুক্ষেত্রের ময়দান সব জায়গাতেই পাশার দানের মাধ্যমে খেলা জিতে যেতেন দক্ষ ও কপট জুয়াড়ি মামা শকুনি।