অফবিট

পৃথিবীর কোন মুসলিম দেশের মুদ্রায় ভগবান গণেশের ছবি আছে?

নিউজ ডেস্ক – বিশ্বের ধর্ম সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই হিন্দু ও মুসলমানের বিবাদ লেগেই রয়েছে। সম্প্রতি ২০২১ সালের দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন বাংলাদেশের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গার জন্য। কিন্তু এই সকল বিবাদকে পেছনে ফেলে হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ায়। 

দেখা গিয়েছে ইন্দোনেশিয়া মূলত  মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত দেশ। এখানে মুসলিম বসবাস করে ৮৭.৫ শতাংশ। পাশাপাশি হিন্দুদের শতকরা প্রায় ৩ শতাংশ। কিন্তু হিন্দু সংখ্যা কম থাকলেও এই দেশের পয়সায় রয়েছে গণেশের মূর্তির ছাপ। যদিও এর পেছনে রয়েছে একটি পোক্ত কারণ।

ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে প্রথম শতাব্দীতে ইন্দোনেশিয়ায়  বেশিরভাগ মানুষই ছিল হিন্দু। যার কারণে বর্তমানেও সেই সংস্কৃতি বহন করে চলেছে দেশ। কারণ দেশের নাগরিকরা মনে করেন গণেশ হলো শিল্পকলা, বিজ্ঞান এবং জ্ঞানের দেবতা। সেই কারণে দেশের পয়সায় গণেশের ছবি দেওয়ার পাশাপাশি  স্কুল-কলেজেও রীতিমতো রামায়ণ-মহাভারত পড়ানো হয়। ‌ এমনকি তাদের জাকার্তা স্কোয়ারে বড় পড়ে কৃষ্ণ এবং অর্জুনের স্ট্যাচু করা রয়েছে। 

শুধুমাত্র জনসাধারণের মধ্যেই নয় দেশের সরকারি ব্যবস্থা মধ্যেও এর নিদর্শন দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ইন্দোনেশিয়ার মিলিটারিদের মধ্যে হিন্দু দেবতা হনুমানের পুজো খুবই বিখ্যাত। কারণ সেনাবাহিনীরা মনে করেন  হনুমান তাদের যুদ্ধে রক্ষা করবে। যার কারনে বালি ট্যুরিজম এবং বানদং ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির লোগো হিন্দু মাইথোলজি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা হয়েছে। 

তবে ইন্দোনেশিয়ার টাকার ছবি ভালো করেই খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে সেখানে হিন্দু দেবতার পাশাপাশি রয়েছেন বিপ্লবী কি হাজার দেওয়ানতারার ছবি এবং টাকার উল্টোপিঠে রয়েছে স্কুলছাত্রদের ছবি, যেটি সেই দেশের শিক্ষার প্রতীকী হিসেবে কাজ করে। 

অন্যদিকে আরেক গোষ্ঠীর মতানুসারে ইন্দোনেশিয়ার টাকাতে গণেশের ছবির কারণ হিসাবে বলা হয়েছে সম্প্রতি এককালে ডক্টর সুব্রামানিয়াম স্বামী ইন্দোনেশিয়ার ফিন্যান্স মিনিস্টার কে জিজ্ঞাসা করে এর কারণ! তখন দেশের মন্ত্রী বলেন,” ১৯৯৭ সালে এশিয়ার অনেক দেশগুলোতে মূল্য হ্রাস পেয়েছিল। যার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় তার প্রভাব পড়েছিল সবচেয়ে বেশি। তখন দেশের অনেকেই বলেন টাকার উপর গণেশের ছবি রাখলে নাকি এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এমনকি সেই সময় দেশে হিন্দু মাইথোলজির গুরুত্ব ছিল মারাত্মক। তাই সেই ধারণা পোষণ করে তাকায় গণেশ এর মূর্তির ছবি দেওয়া হয়। এবং সেটি হাতেনাতে প্রমাণও দেয়। কার্যত দেখা যায়  গণেশের ছবি দেওয়ার পর থেকে আর্থিক দিক থেকে উন্নত শিখরে পৌঁছায় এশিয়া তথা ইন্দোনেশিয়া। যার কারনে সেই সময়কাল থেকে বর্তমানেও এমনকি ভবিষ্যতেও এই নিয়ম চালু রাখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *