শিমলায় ১০০ বছরের আগের মৃত ভারতীয় কর্নেলের অতৃপ্ত আত্মা আজও পাহারায়
ভারতের হিমাচল প্রদেশের একটি ছোট্ট স্থান শিমলা। আকারে ছোট হলেও এই জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিন্তু সত্যিই অতুলনীয়। আর এই সৌন্দর্যের টানে প্রত্যেক বছর দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ শিমলা ভ্রমণ করতে আসেন। তবে এই সৌন্দর্যের আড়ালেই রয়েছে এক শিহরণ জাগানো ভয়ঙ্কর জায়গা। এককথায় ভৌতিক গল্পের পটভূমি ও বলা যায় তাকে ।ভূতে বিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক সিমলা ঘুরতে গেলে এই জায়গা কে এড়িয়ে চলাই ভালো রাতের অন্ধকারে।
তবে যদি বলি নিজের অজান্তেই হয়তো সিমলা যাওয়ার সময় এই জায়গা অতিক্রম করেছেন আপনি? অবাক হচ্ছেন তো? জানতে ইচ্ছা করছে নিশ্চয়ই যে কোন জায়গার কথা বলছি?রাতের অন্ধকারে ট্রেনে চেপে যদি সিমলা গিয়ে থাকেন কখনো মনে করে দেখুন তো কোন টানেল পেরোতে হয়েছিল কিনা?যদি না পেরিয়ে থাকেন তবে তো খুবই ভালো আর যদি গিয়েও থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন পরের বার থেকে যেন ওই রাস্তা দিয়ে আর না যেতে হয়। এই টানেলের নাম হচ্ছে টানেল নাম্বার 33।
পাহাড়ি এলাকায় অনেক সময় টানেলের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই পাহাড় কেটে বানানো হয় এ সমস্ত টানেল। মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে এইটা নেম নাম্বার 33 নিয়ে এত ভয় কিসের ? আসলে এই টানেলটি অন্যান্য টানেলের থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। একে কেন্দ্র করে শোনা যায় বিভিন্ন রহস্যজনক ঘটনা। শোনা যায় একবার এক মহিলা নাকি এইটা নীল থেকে চিৎকার করতে করতে ছুটে বেরিয়ে আসেন তাকে প্রশ্ন করলে জানা যায় টানেলের অন্ধকারে এক ব্যক্তি তাকে সিগারেট জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়াও স্থানীয়দের মতে প্রায়ই নানা অলৌকিক ঘটনা ঘটে এই টানেলের ভিতর। সবথেকে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল যে টানেলের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল একবার কিন্তু অদ্ভুতভাবে ভেঙে যায় এখানকার দরজার তালা।
কিন্তু কেন এই টানেলে ঘটে এরকম অলৌকিক ঘটনা? বলা হয় ,1143.61 মিটার দীর্ঘ টানেলটি তৈরির ইতিহাসেই লুকিয়ে এর ভয়ঙ্কর দিকটা৷ বিশ্বের দীর্ঘতম সোজা টানেল বলে পরিচিত এই টানেলটি তৈরীর দায়িত্বে ছিলেন কর্নেল বারোগ৷দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তিনি পাহাড়ের দুপ্রান্ত থেকে গর্ত খোঁড়া শুরু করেন কর্মচারীদের দিয়ে। কিন্তু হিসাবে সামান্য গন্ডগোল থাকায় টানেলের দুই প্রান্ত এসে এক জায়গায় মিলিত হয় নি। তার তথ্য ভুল প্রমাণিত হওয়ায় সেই সময় তাকে এই কাজের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এমনকি জরিমানাও দিতে হয় তাকে। আর সেই দুঃখে অপমানিত বারোগ তার প্রিয় পোষ্যের সামনে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়রা তাকে সেই অর্ধসমাপ্ত তাদের সামনে কবর দেন। পরবর্তীকালে 1903 সালে অন্য এক ইঞ্জিনিয়ার এই টানেলটি তৈরীর কাজ সমাপ্ত করেন। প্রয়াত কর্নেলের নামে নামকরণ হয় এর। কিন্তু কথিত আছে যে কর্নেলের আত্মা এখনো মুক্তিলাভ করেনি। এবং তার আত্মায় এখনো অব্দি বিরাজ করে এই টানেলে।